আমরা কি পরকালের জন্য প্রস্তুত?


এক বাদশার একটি বাগান ছিল।
বাগানটি ছিল অনেক বড় এবং বিভিন্ন
স্তর বিশিষ্ট। বাদশাহ একজন
লোককে ডাকলেন। তার
হাতে একটি ঝুড়ি দিয়ে বললেন, আমার
এই বাগানে যাও এবং ঝুড়ি বোঝাই
করে নানা রকম ফলমুল নিয়ে আস।
তুমি যদি ঝুঁড়ি ভরে ফল আনতে পার
আমি তোমাকে পুরস্কৃত করব। কিন্তু শর্ত
হল, বাগানের যে অংশ তুমি পার
হবে সেখানে তুমি আর
যেতে পারবে না।
লোকটি মনে করলো এটা তো কোন কঠিন
কাজ নয়। সে এক
দরজা দিয়ে বাগানে প্রবেশ করল।
দেখল, গাছে গাছে ফল পেকে আছে।
নানা জাতের সুন্দর সুন্দর ফল। কিন্তু
এগুলো তার পছন্দ হল না।
সে বাগানের সামনের অংশে গেল।
এখানকার ফলগুলো তার কিছুটা পছন্দ
হল। কিন্তু সে ভাবল আচ্ছা থাক
সামনের
অংশে গিয়ে দেখি সেখানে হয়ত
আরো উন্নত ফল পাব, সেখান থেকেই ফল
নিয়ে ঝুঁড়ি ভরব।
সে সামনে এসে পরের
অংশে এসে অনেক উন্নত মানের ফল
পেল।
এখানে এ সে তার মনে হল এখান
থেকে কিছু ফল ছিড়ে নেই। কিন্তু
পরক্ষণে ভাবতে লাগলো যে সবচেয়ে ভা
ফলই ঝুড়িতে নিবে। তাই
সে সামনে এগিয়ে বাগানের সর্বশেষ
অংশে প্রবেশ করল।
সে এখানে এসে দেখল ফলের কোন
চিহ্ন ই নেই। অতএব সে আফসোস
করতে লাগল আর বলতে লাগল, হায়
আমি যদি বাগানে ঢুকেই ফল সংগ্রহ
করতাম তাহলে আমার ঝুড়ি এখন
খালি থাকত না। আমি এখন
বাদশাকে কি করে মুখ দেখাব।
ঘটনা বর্ণনা করার পর শায়েখ
গজালি (রহ:) বলেন, বন্ধুগণ, বাদশাহ
হলেন আল্লাহ, আর বাগানে প্রবেশ
কারি লোকটি হল তুমি। আর
ঝুড়ি দ্বারা উদ্দেশ্য হল তোমার
আমলনামা। আর বাগান দ্বারা
উদ্দেশ্য হল তোমার জীবন। বাগানের
বিভিন্ন অংশ তোমার জীবনের বিভিন্ন
ধাপ। আর তোমাকে নেক কাজের ফল
ছিড়তে বলা হয়েছে, কিন্তু
তুমি প্রতিদিনই ভাব, আগামী কাল
থেকে ফল ছেড়া আরম্ভ করব।
আগামী দিন আগামী দিন
করতে করতে তোমার জীবনে আর
আগামী দিন আসবে না। এভাবেই
তুমি রিক্ত হস্তে মাওলার
সামনে হাজির হবে।

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.