মিনা, আরাফার ময়দান, মুযদালিফা সম্পর্কিত ,মুযদালিফা থেকে মিনায় কত আগে যাওয়া যায়?


যুল-হজ্জের ৮ তারিখে মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামায না পড়লে এবং রাত্রি বাস না করলে হজ্জের কোন ক্ষতি হয় কি?

যুল হজ্জের ৮ তারিখে মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামায না পড়লে এবং রাত্রি বাস না করলে কোন ক্ষতি হয় না। অবশ্য তা সুন্নত। মতান্তরে ওয়াজেব। ৩৬৪ (মানাসিকুল হাজ্জ, আলবানী ৭ পৃঃ)

আরাফার ময়দানে হাত তুলে দু’য়া করা যায় কি?

আরাফার ময়দানে হাত তুলে দু’আ করা যায়। জামাআতের একজন দু’আ ও বাকী ‘আমীন আমীন’ করলেও দোষ নেই। তবে একাকী দুআই এখানে শরীয়ত সম্মত ও উত্তম। ৩৬৫ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৬৭-২৬৮, আল-মুমতে ৭/৩২৯-৩৩০)

আরাফার সীমা থেকে সূর্য ডোবার পূর্বেই বের হয়ে এলে কোন ক্ষতি হবে কি?

আরাফার সীমা থেকে সূর্য ডোবার পূর্বেই বের হয়ে এলে ফিদয়্যাহ লাগবে; যা মক্কায় যবেহ করে সেখানকার গরীবদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। দেশে ফিরে গেলে এবং পুনরায় মক্কায় যাওয়া সম্ভব না হলে মক্কার মুসাফির বা পরিচিত কাউকে এ দায়িত্বভার সমর্পণ করবে। কেউ না থাকলে দেশেই যবেহ করে গোশত গরীবদের মাঝে বণ্ঠন করে দেবে। ৩৬৬ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ৬/২৫৪, ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৬৪)

মুযদালিফায় রাত্রিবাস না করতে পারলে করণীয় কি?

মুযদালিফায় রাত্রিবাস ওয়াজেব। ত্যাগ করলে দম লাগবে। মুযদালিফায় ফজরের নামায পেলে সেটুকুই যথেষ্ট।৩৬৭ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭১)

নিয়ম হল মুযদালিফায় পৌঁছে মাগরিব ও এশা জমা করে পড়া। কিন্তু ভিড়ের চাপে আরাফা থেকে মুযদালিফা আসতে আসতে যদি অর্ধরাত্রি পার হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে করণীয় কি?

আরাফা থেকে মুযদালিফা আসতে আসতে যদি অর্ধরাত্রি পার হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে মাগরিব এশার নামায চলার পথে মুযদালিফার বাইরে হলেও পড়ে নেবে। ৩৬৮ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭০)

ভিড়ের কারণে মাশআরুল হারামের নিকট গিয়ে দুআ করা যদি সম্ভভ না হয়, তাহলে কোন ক্ষতি হবে কি?

মাশআরুল হারামে গিয়ে দুআ করা ওয়াজেব নয়; করা ভাল। ৩৬৯ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭১)

ভিড়ের কারণে ফজরের আগে পর্যন্ত মুযদালিফার সিমানায় প্রবেশ না করতে পারলে করণীয় কি?

ভিড় অথবা অন্য কোন কারণে মুযদালিফার সিমানায় প্রবেশ না করতে পারলে সেখানে রাত্রিবাস মাফ হয়ে যাবে এবং দম লাগবে না। যেহেতু যা সাধ্যের বাইরে, তা ক্ষমার্হ। ৩৭০ (ঐ)
অবশ্য সতর্কতামূলকভাবে মক্কায় একটি কুরবানী করা উচিৎ। সামর্থ্য না থাকলে মাফ। ৩৭১ (ইবনে উষাইমীন)

মুযদালিফা থেকে মুআল্লিমের বাস অর্ধরাত্রি পূর্বে তাড়াহুড়া করে চলে যেতে চাইলে করণীয় কি?

মুযদালিফা থেকে মুআল্লিমের বাস অর্ধরাত্রির পূর্বে তাড়াহুড়া করে চলে যেতে চাইলে বাস ছেড়ে পায়ে হেঁটে ফজরের পর মিনায় যাবে। হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলে বাসেই যাবে। বাধ্য হওয়ার কারণেই তাঁর উপর দম ওয়াজেব হবে না। ৩৭২ (ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৬০০)

মুযদালিফা থেকে মিনায় কত আগে যাওয়া যায়?

মুযদালিফা থেকে অর্ধরাত্রি পর মিনায় যাওয়া যায়। তবে চন্দ্র অস্ত যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উত্তম। আর এ শুধু দুর্বল শ্রেণীর মানুষ (ও তাঁদের সহযোগী সঙ্গী) দের জন্য। ৩৭৩ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭২)

অর্ধরাত্রির পর এই শ্রেণীর মানুষের জামরায়ে আক্বাবায় পাথর মেরে মক্কায় হজ্জের তওয়াফও করতে পারে। ৩৭৪ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ১৩/ ৮৬)

তবে অর্ধরাত্রির পূর্বে রমই ও তওয়াফ করলে তা শুদ্ধ হবে না। করে ফেললে পুনরায় করতে হবে। নচেৎ রমইর জন্য মক্কায় দম দেবে এবং তওয়াফ যূল হজ্জের বা মুহরামের শেষে অথবা যখন ভুল বুঝতে পারবে তখনই মক্কা এসে পূর্ণ করবে। নচেৎ হজ্জ হবে না।

তাশরীকের রাত্রিগুলি মিনায় না কাটলে করনীয় কি?

তাশরীকের রাত্রিগুলো মিনায় যাপন করা জরুরী। অবশ্য ১২ তারিখের সূর্যাস্তের পূর্বে বের হয়ে গেলে ১৩ তারিখের রাত্রি যাপন করতে হয় না। কিন্তু যদি কেউ ১১ তারিখে মিনা ত্যাগ করে চলে যায়, তবে তাকে ফিদয়্যাহ দিতে হবে। ৩৮৭ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ১৩/৮৮)অবশ্য অসুখের কারণে ত্যাগ করতে বাধ্য হলে কোন কিছু ওয়াজেব নয়। আল্লাহ কাউকে তাঁর সামর্থ্যের অধিক দায়িত্ব অর্পণ করেন না। ৩৮৮ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/২৭৬)

রাত্রির অধিকাংশ সময় মিনায় কাটিয়ে বাকী সময় (অথবা সারা দিন) অন্য কোথাও বা মাসজিদুল হারামে কাটানো যায় কি?

রাত্রির অধিকাংশ সময় মিনায় কাটিয়ে বাকী সময় (অথবা সারা দিন) অন্য কোথাও বা মাসজিদুল হারামে কাটানো যায়। তাঁতে কোন ক্ষতি হয় না। ৩৮৯ (ঐ ২/২৭৪)

মিনায় থাকার জন্য জায়গা না পেলে করণীয় কি?

মিনায় থাকার জন্য জায়গা না পেলে মিনার সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী কোন জায়গায় মিনায় অবস্থানকারী অন্যান্য হাজীদের পাশাপাশি স্থান নিয়ে বাস করবে। মিনার সীমানার ভিতরে জায়গা পায়নি বলে মক্কায় রাত্রিযাপন বৈধ হবে না। ৩৯০(ফাতাওয়া ইবনে উষাইমিন ২/৬০৪)যেমন সামর্থ্য থাকতে কম ভাড়া পেয়ে মিনা ছেড়ে মুযদালিফায় খিমা নেওয়া বৈধ নয়।