কালেমা মেনে চলার শর্তাবলী!!


  1. “কালেমা” মেনে চলার শর্তাবলীএক : কালেমা তাইয়েবার অর্থ জানা। অর্থাৎ একালেমার দুটো অংশ রয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে জানা।সে দুটো অংশ হলো:১. কোন হক মা’বুদ নেই২. আল্লাহ ছাড়া (অর্থাৎ তিনিই শুধু মা’বুদ)দুই : কালেমা তাইয়েবার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।অর্থাৎ সর্ব-প্রকার সন্দেহ ও সংশয়মুক্ত পরিপূর্ণবিশ্বাস থাকা।তিন : কালেমার উপর এমন একাগ্রতা ও নিষ্ঠা রাখা, যাসর্বপ্রকার শিরকের পরিপন্থী।চার : কালেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলে জানা,যাতে কোন প্রকার মিথ্যা বা কপটতা না থাকে।পাঁচ : এ কালেমার প্রতি ভালবাসা পোষণ এবং কালেমারঅর্থকে মনে প্রাণে মেনে নেয়া ও তাতেখুশী হওয়া।ছয় : এই কালেমার অর্পিত দায়িত্ব সমূহ মেনে নেয়াঅর্থাৎ এই কালেমা কর্তৃক আরোপিত ওয়াজিবকাজসমূহ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং তাঁরই সন্তুষ্টিরনিমিত্তে সমাধা করা।সাত :মনে-প্রাণে এই কালেমাকে গ্রহণ করা যাতেকখনো বিরোধিতা করা না হয়।কালেমা তাইয়েবার যে সমস্ত শর্ত বর্ণিত হলো,তার সমর্থনে কোরআন ও হাদিস থেকে দলিলপ্রমাণাদি:প্রথম শর্ত: কালেমার অর্থ জানা। এর দলিল :আল্লাহর বাণী:“জেনে রাখুন নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া কোন হক মা‘বুদনেই।” [সূরা মুহাম্মাদ: ১৯]।আল্লাহ আরও বলেন:“তবে যারা হক (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু) এর সাক্ষ্য দিবেএমনভাবে যে, তারা তা জেনে শুনেই দিচ্ছেঅর্থাৎ তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।” [সূরা আয-যুখরুফ: ৮৬]এখানে জেনে শুনে সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ হলোতারা মুখে যা উচ্চারণ করছে তাদের অন্তর তাসম্যকভাবে জানে।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “যেব্যক্তি এমতাবস্থায় মারা যায় যে সে জানে আল্লাহছাড়া কোন সঠিক উপাস্য নেই সে জান্নাতেযাবে।”[1]দ্বিতীয় শর্ত : কালেমার উপর বিশ্বাসী হওয়া। এরপ্রমাণাদি:আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “নিশ্চয়ই মুমিন ওরাই যারাআল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান এনেছে, অতঃপরএতে কোন সন্দেহ-সংশয়ে পড়ে নি এবং তাদেরজান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে।তারাই তো সত্যবাদী।” [সুরা আল-হুজুরাত: ১৫]এ আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমানযথাযথভাবে হওয়ার জন্য সন্দেহ-সংশয়মুক্ত হওয়ারশর্ত আরোপ করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা সন্দেহকরে নি। কিন্তু যে সন্দেহ করবে সে মুনাফিক,ভণ্ড (কপট বিশ্বাসী)।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমিসাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সঠিক মা’বুদ বাউপাস্য নেই, আর আমি আল্লাহর রাসূল। যে বান্দা এদুটো বিষয়ে সন্দেহ-সংশয়মুক্ত অবস্থায় আল্লাহরসাক্ষাতে হাজির হবে, সে জান্নাতে প্রবেশকরবে।”[2]আর এক বর্ণনায় এসেছে : “কোন ব্যক্তি এ দুটিনিয়ে সন্দেহহীন অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাতেহাজির হবে জান্নাতে যাওয়ার পথে তার কোন বাধাথাকবে না।”[3]আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে অপর এক হাদিসেরবর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকেবলেছিলেন: “তুমি এ বাগানের পিছনে এমন যাকেইপাও, যে মনের পরিপূর্ণ বিশ্বাস এর সাথে এ-সাক্ষ্যদিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সঠিক মা’বুদ নেই—তাকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করবে।”[4]তৃতীয় শর্ত : এ কালেমাকে ইখলাস বা নিষ্ঠাসহকারে স্বীকার করা। এর দলীল:আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তবে জেনে রাখ দীনখালেস সহকারে বা নিষ্ঠা সহকারে কেবলমাত্রআল্লাহর জন্যই।” [সূরা আয্-যুমার: ৩]আল্লাহ আরও বলেন: “তাদেরকে এ নির্দেশই শুধুপ্রদান করা হয়েছে যে, তারা নিজেদেরদীনকে আল্লাহর জন্যই খালেস করেসম্পূর্ণরূপে একনিষ্ঠ ও একমুখী হয়ে তাঁরই ইবাদাতকরবে।” [সূরা আল-বাইয়েনাহ: ৫]হাদিস শরিফে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেবর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আমার সুপারিশ দ্বারা ঐব্যক্তিই বেশি সৌভাগ্যবান হবে যে অন্তর থেকেএকনিষ্ঠভাবে বলেছে, আল্লাহ ছাড়া কোনোসত্যিকার উপাস্য নেই।”[5]অপর এক সহিহ হাদিসে সাহাবি উত্বান ইব্ন মালিকরাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “যেব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ বা আল্লাহ ছাড়া হক কোন মা’বুদ নেইবলেছে, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারামকরেছেন।”[6]ইমাম নাসায়ি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত “দিন-রাত্রিরযিক্র” নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন: রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যেব্যক্তি মনের নিষ্ঠা সহকারে এবং মুখে সত্যজেনে নিম্নোক্ত কলেমাসমূাহ বলবে আল্লাহসেগুলোর জন্য আকাশকে বিদীর্ণ করবেনযাতে তার দ্বারা জমিনের মাঝে কে এই কালেমাগুলিবলেছে তার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। আর যারদিকে আল্লাহর নজর পড়বে তার প্রার্থিত ওকাঙ্ক্ষিত বস্তু তাকে দেয়া আল্লাহর দায়িত্ব। সেকালেমাগুলি হলো:ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺣﺪﻩ ﻻ ﺷﺮﻳﻚ ﻟﻪ، ﻟﻪ ﺍﻟﻤﻠﻚ ﻭﻟﻪ ﺍﻟﺤﻤﺪﻭﻫﻮ ﻋﻠﻰ ﻛﻞ ﺷﻲﺀ ﻗﺪﻳﺮঅর্থাৎ : “শুধুমাত্র আল্লাহ ছাড়া হক কোন মা’বুদনেই, তার কোন শরিক বা অংশীদার নেই, তারজন্যই সমস্ত রাজত্ব বা একচ্ছত্র মালিকানা, তার জন্যইসমস্ত প্রশংসা আর তিনি প্রত্যেক বস্তুর উপরক্ষমতাবান”।[7]চতুর্থ শর্ত : কলেমাকে মনে প্রাণে সত্য বলেজানা। এর দলীল:আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আলিফ-লাম-মীম, মানুষ কিধারণা করেছে যে, ঈমান এনেছি বললেইতাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে আর তাদেরপরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদেরপূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি যাতে আল্লাহরসাথে যারা সত্য বলেছে তাদেরকে স্পষ্ট করেদেন এবং যারা মিথ্যা বলেছে তাদেরকেও স্পষ্টকরে দেন।”[সূরা আল-আনকাবুত: ১-৩]আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন : “মানুষের মাঝেকেউ কেউ বলে আমরা আল্লাহ এবং পরকালেরউপর ঈমান এনেছি, অথচ তারা ইমানদার নয়। তারা (তাদেরধারণামতে) আল্লাহ ও ইমানদারদের সাথে প্রতারণাকরছে, অথচ (তারা জানে না) তারা কেবল তাদেরআত্মাকেই প্রতারিত করছে কিন্তু তারা তা বুঝতেইপারছে না। তাদের অন্তরে রয়েছে ব্যাধি, ফলেআল্লাহ সে ব্যাধিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন,আর মিথ্যা বলার কারণে তাদের জন্য রয়েছেকষ্টদায়ক শাস্তি।” [সূরা আল-বাকারা: ৮-১০]তেমনিভাবে হাদিস শরিফে মু‘আয ইব্ন জাবালরাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:“যেকোনো লোক মন থেকে সত্য জেনেএ-সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ব্যতীত হক কোনমা’বুদ নেই আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামতাঁর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারামকরেছেন।”[8]পঞ্চম শর্ত : এ কালেমাকে মনে প্রাণে ভালবাসা।এর দলীল:আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “কোনো কোনোলোক আল্লাহ ছাড়া তার অনেক সমকক্ষ ওঅংশীদার গ্রহণ করে তাদেরকে আল্লাহর মতভালবাসে, আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকেঅত্যন্ত বেশি ভালবাসে”। [সূরা আল-বাকারা: ১৬৫]আল্লাহ আরও বলেন: “হে ইমানদারগণ তোমাদেরথেকে যদি কেহ তার দীনকে পরিত্যাগ করেতবে আল্লাহ এমন এক গোষ্ঠীকেতোমাদের স্থলাভিষিক্ত করে আনবেন,যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন এবং তারাও আল্লাহকেভালবাসেন, যারা মুমিনদের প্রতি নরম— দয়াপরবশ,কাফেরদের উপর কঠোরতা অবলম্বনকারী; তারাআল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে, কোন নিন্দুকেরনিন্দাকে ভয় করে না।” [সূরা আল মায়েদা: ৫৪]তেমনিভাবে হাদিস শরিফে আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুথেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যার মধ্যে তিনটিবস্তুর সমাহার ঘটেছে সে ঈমানের স্বাদপেয়েছে: (এক) তার কাছে আল্লাহ ও তাঁররাসূলের মহব্বত বা ভালবাসা অন্য সব-কিছু থেকেবেশি হবে। (দুই) কোনো লোককে শুধুমাত্রআল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে। (তিন) কুফরিথেকে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেয়ার পর সেকুফরির দিকে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্তহওয়ার মত অপছন্দ করবে।”[9]ষষ্ঠ শর্ত: কালেমার হকসমূহ মনে প্রাণে মেনেনেয়া। এর দলীল:আল্লাহর বাণী: “আর তোমরা তোমাদের প্রভুরদিকে ফিরে যাও, এবং তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকরো।” [সূরা আয্-যুমার: ৫৪]আল্লাহ আরও বলেন: “আর তারচেয়ে কার দীনবেশি সুন্দর যে আল্লাহর জন্য নিজেকে সমর্পণকরেছে, এমতাবস্থায় যে, সে মুহসিন”, [সূরা আন্-নিসা: ১২৫] মুহসিন অর্থ: নেককার, অর্থাৎ নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত অনুযায়ীআমল করেছে।আরও বলেন: “আর যে নিজেকে শুধুমাত্রআল্লাহর দিকেই নিবদ্ধ করে আত্মসমর্পণকরেছে আর সে মুহসিন”, অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নত অনুযায়ী আমলকরেছে, “সে মজবুত রশিকে আঁকড়েধরেছে” [সূরা লুকমান: ২২] অর্থাৎ: ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ বাআল্লাহ ছাড়া কোন হক মাবুদ নেই এ কালেমাকেইসে গ্রহণ করেছে।আরও বলেন: “তারা যা বলছে তা নয়, তোমার প্রভুরশপথ করে বলছি, তারা কক্ষনো ইমানদার হবে নাযতক্ষণ আপনাকে তাদের মধ্যকার ঝগড়ারনিষ্পত্তিকারক (বিচারক) হিসাবে না মানবে, অতঃপরআপনার বিচার-ফয়সালা গ্রহণ করে নিতে তাদেরঅন্তরে কোন প্রকার অভিযোগ থাকবে না এবংতারা তা সম্পূর্ণ কায়মনোবাক্যে নির্দ্বিধায় মেনেনিবে।” [সূরা আন্-নিসা: ৬৫]অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেন: “তোমাদের মাঝে কেউই ঐ পর্যন্তইমানদার হতে পারবেনা যতক্ষণ তার প্রবৃত্তি আমি যানিয়ে এসেছি তার অনুসারী হবে।”[10] আর এটাইপূর্ণ আনুগত্য ও তার শেষ সীমা।সপ্তম শর্ত: কালেমাকে গ্রহণ করা। এর দলীল:আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর এমনিভাবে যখনইআপনার পূর্বে আমি কোন জনপদে ভয়প্রদর্শনকারী (রাসূল বা নবী) প্রেরণ করেছিতখনি তাদের মধ্যকার আয়েশি বিত্তশালীলোকেরা বলেছে: আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে একটি ব্যবস্থায় পেয়েছি, আমরাতাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করবো। (ভয়প্রদর্শনকারী) বলল: আমি যদি তোমাদের কাছেবাপ-দাদাদেরকে যার উপর পেয়েছ তার থেকেঅধিক সঠিক বা বেশি হেদায়েত নিয়ে এসে থাকিতারপরও (তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার অনুকরণকরবে)? তারা বলল: তোমরা যা নিয়ে এসেছ আমরাতা গ্রহণ করতে অস্বীকার করছি, ফলে আমি(আল্লাহ) তাদের থেকে (এ কুফরির) প্রতিশোধনেই, সুতরাং আপনি মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের পরিণাম-ফল কেমন হয়েছে দেখে নিন।”[সূরা আয্-যুখরুফ:২৩-২৫]আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন: “নিশ্চয়ই তারা অযথাঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত যখন তাদেরকে বলা হতযে, আল্লাহ ছাড়া কোন হক মা’বুদ নেই, এবংবলতো: আমরা কি পাগল কবির কথা শুনে আমাদেরউপাস্য দেবতাগুলোকে ত্যাগ করবো?” [সূরা আস্-সাফ্ফাত: ৩৫-৩৭]অনুরূপভাবে হাদিসে শরিফে আবু মুসা আশ‘আরিরাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ আমাকেযে জ্ঞান বিজ্ঞান ও হেদায়েত দিয়েপাঠিয়েছেন তার উদাহরণ হচ্ছে এমন মুষলধারারবৃষ্টির মতো যা ভূমিতে এসে পড়েছে, ফলে এরকিছু অংশ এমন উর্বর পরিষ্কার ভূমিতে পড়েছে যেভূমি পানি চুষে নিতে সক্ষম, ফলে তা পানি গ্রহণকরেছে এবং তা দ্বারা ফসল ও তৃণলতার উৎপত্তিহয়েছে। আবার তার কিছু অংশ পড়েছে গর্তওয়ালাভূমিতে (যা পানি আটকে রাখতে সক্ষম) সুতরাং তা পানিসংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে, ফলে আল্লাহএর দ্বারা মানুষের উপকার করেছেন তারা তা পানকরেছে, ভূমি সিক্ত করিয়েছে এবং ফসলাদি উৎপন্নকরতে পেরেছে। আবার তার কিছু অংশ পড়েছেএমন অনুর্বর সমতল ভূমিতে যাতে পানি আটকেথাকে না, ফলে তাতে পানি আটকা পড়ে নি, ফসলওহয় নি। ঠিক এটাই হলো ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত যেআল্লাহর দীনকে বুঝতে পেরেছে এবংআমাকে যা দিয়ে পাঠিয়েছেন তা থেকে উপকৃতহতে পেরেছে, ফলে সে নিজে জেনেছেএবং অপরকে জানিয়েছে (প্রথম ও দ্বিতীয়শ্রেণির ভূমি) এবং ঐ ব্যক্তির উদাহরণ যে এইহিদায়েত এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের দিকে মাথা উঁচু করেতাকায় নি, ফলে আল্লাহ যে হিদায়েত নিয়ে আমাকেপ্রেরণ করেছেন তা গ্রহণ করেনি। (তৃতীয়শ্রেণির ভূমি)।”[11]________________________________________[1] মুসলিম: (১/৫৫), হাদিস নং-২৬।[2] মুসলিম: (১/৫৬), হাদিস নং-২৭০।[3] মুসলিম (১/৫৬), হাদিস নং-২৭০।[4] মুসলিম (১/৫৯)।[5] বুখারি, হাদিস নং-৯৯।[6] বুখারি, হাদিস নং-৪২৫; মুসলিম (১/৪৫৬), হাদিস নং- ২৬৩।[7] নাসায়ি, আমালুল ইয়াওমে ওয়াল্লাইলা, হাদিস নং- ২৮।[8] বুখারি, হাদিস নং-১২৮; মুসলিম: (১/৬১)।[9] বুখারি, হাদিস নং-৪৩; মুসলিম: (১/৬৬)।[10] হাদিসটি খতিব বাগদাদি তার তারিখে বাগদাদের ৪/৩৬৯,এবং বাগাভি তার শারহুস্সুন্নাহ্ -এর ১০৪ নং -এ বর্ণনাকরেছেন। হাদিসটির সনদ শুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারেমতভেদ আছে।[11] সহিহ বুখারি (১/১৭৫) হাদিস নং-৭৯; সহিহ মুসলিম, হাদিসনং ২২৮২।মূলঃ শাইখ আব্দুল্লাহ ইব্ন ইবরাহীম আল কার‘আওয়ীঅনুবাদ: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়াসম্পাদনা: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী