বুকের উপর হাত বাধার সহিহ হাদিস সমুহ


বুকের উপর হাত বাঁধার ছহীহ হাদীছ সমূহ : রাসূল (ছাঃ) সর্বদা বুকের উপর হাত বেঁধে ছালাত আদায় করতেন। উক্ত মর্মে একাধিক ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি পেশ করা হল : (১) সাহল বিন সা‘দ (রাঃ) বলেন, লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হত, মুছল্লী যেন ছালাতের মধ্যে তার ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখে। আবু হাযেম বলেন, এটা রাসূল (ছাঃ)-এর দিকেই ইঙ্গিত করা হত বলে আমি জানি। (ছহীহ বুখারী হা/৭৪০, ১/১০২ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭০৪, ২য় খণ্ড, পৃঃ ১০২)। মূলতঃ পুরো ডান হাতের উপর বাম হাত রাখলে বুকের উপরই চলে যায়। ‘অনুরূপ ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) ডান হাত বাম হাতের পাতা, হাত ও বাহুর উপর রাখতেন। যা ছহীহ সনদে আবুদাঊদ ও নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। এই পদ্ধতিই আমাদের জন্য অপরিহার্য করে যে হাত রাখতে হবে বুকের উপর। যদি আপনি এটা বুঝেন এবং এর প্রতি আমল করেন। অতএব আপনি চাইলে যাচাই করতে পারেন। আর এ সম্পর্কে যা জানা উচিত তা হল, বুকের উপর ছাড়া অন্যত্র হাত বাঁধার বিষয়টি রাসূল (ছাঃ) থেকে ছহীহ হিসাবে সাব্যস- হয়নি। যেমন একটি হাদীছ, ‘সুন্নাত হল ছালাতের মধ্যে নাভীর নীচে হাতের পাতা রাখা’ (এই বর্ণনা সঠিক নয়)।- মিশকাত হা/৭৯৮ -এর টীকা দ্রঃ, ১/২৪৯ পৃঃ। বিশেষ জ্ঞাতব্য : ছহীহ বুখারীতে বর্ণিত উক্ত হাদীছের অনুবাদ করতে গিয়ে ইসলামিক ফাউণ্ডেশন অনুবাদে ‘ডান হাত বাম হাতের কবজির উপরে’ মর্মে অনুবাদ করা হয়েছে। আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত বুখারীতেও একই অনুবাদ করা হয়েছে। অথচ ইসলমিক ফাউণ্ডেশন প্রকাশিত একই খণ্ডের মধ্যে অন্যত্র এর অর্থ করা হয়েছে ‘বাহু’। কিন্তু ‘বাহু’ আর ‘কব্জি’ কি এক বস্তু ? সব হাদীছ গ্রন্থে ‘যিরা’ অর্থ ‘বাহু’ করা হয়েছে। যেমন রাসূল (ছাঃ) ওযূ করার সময় মুখমণ্ডল ধৌত করার পর বাহুর উপর পানি ঢালতেন। এছাড়া আরবী কোন অভিধানে ‘যিরা’ শব্দের অর্থ ‘কব্জি’ করা হয়নি। অতএব কোন সন্দেহ নেই যে, নাভীর নীচে হাত বাঁধার ত্রুটিপূর্ণ আমলকে প্রমাণ করার জন্যই উক্ত কারচুপি করা হয়েছে। অথচ অন্যত্র ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) তাঁর ডান হাতটি বাম হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর উপর রাখতেন, যা পূর্বে পেশ করা হয়েছে। (২) ওয়ায়েল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, আমি অবশ্যই রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাতের দিকে লক্ষ্য করতাম, তিনি কিভাবে ছালাত আদায় করেন। আমি তাঁর দিকে লক্ষ্য করতাম যে, তিনি ছালাতে দাঁড়াতেন অতঃপর তাকবীর দিতেন এবং কান বরাবর দুই হাত উত্তোলন করতেন। তারপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর উপর রাখতেন। অতঃপর যখন তিনি রুকূ করার ইচ্ছা করতেন তখন অনুরূপ দুই হাত উত্তোলন করতেন…। – নাসাঈ হা/৮৮৯, ১/১০২ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/৭২৭, পৃঃ ১০৫; আহমাদ হা/১৮৮৯০; ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ হা/৪৮০; ইবনু হিব্বান হা/১৮৬০, সনদ ছহীহ। উল্লেখ্য যে, ‘মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে’ বইটিতে উক্ত হাদীছটির পূর্ণ অর্থ করা হয়নি; বরং অর্থ গোপন করা হয়েছে। তাছাড়া ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে অর্থ পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে দুইটি শব্দে ভুল হরকত দেয়া হয়েছে। উক্ত হাদীছ প্রমাণ করে যে, রাসূল (ছাঃ) ডান হাতটি পুরো বাম হাতের উপর রাখতেন। এমতাবস্থা য় হাত নাভীর নীচে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এইভাবে হাত রেখে নাভীর নীচে স্থাপন করতে চাইলে মাজা বাঁকা করে নাভীর নীচে হাত নিয়ে যেতে হবে, যা উচিত নয়। আমরা এবার দেখব রাসূল (ছাঃ) তাঁর দুই হাত কোথায় করতেন। (৩) ত্বাঊস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) ছালাতের মধ্যে তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন এবং উভয় হাত বুকের উপর শক্ত করে ধরে রাখতেন।- আবুদাঊদ হা/৭৫৯, সনদ ছহীহ। জরূরী জ্ঞাতব্য : ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে হাত বাঁধা সংক্রান- একটি হাদীছও উলেখিত হয়নি। এর কারণ হক গোপন করা । তবে ইমাম আবুদাঊদ নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে বর্ণিত বর্ণনাগুলোকে যঈফ বলেছেন। আর বুকের উপর হাত বাঁধার হাদীছটিকে ছহীহ হিসাবে পেশ করতে চেয়েছেন। উক্ত হাদীছকে অনেকে নিজস্ব গোঁড়ামী ও ব্যক্তিত্বের বলে যঈফ বলে প্রত্যাখ্যান করতে চান। মুহাদ্দিছগণের মন্তব্যের তোয়াক্কা করেন না।

6 responses to “বুকের উপর হাত বাধার সহিহ হাদিস সমুহ

  1. সেখ আক্রাম আলি

    আসসালামুওয়ালাইকুম
    নামাজের মধ্যে দুই সেজদা কেন কি কারনে? প্রশ্ন ভুল হলে মাফ করবেন.

    Like

  2. মিথ্যা বলে মানুষ কে আর কতো ধোকা দিবেন?

    Like

  3. সুকরান

    Liked by 1 person

  4. ধন্যবাদ আপনাকে। আমিও রিচার্জ করে আপনার মত পেয়েছি।

    Like

  5. আমি আপনার সাথে ১মত।

    Like

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.