সুরা ফাতিহা কি ক্বুরআনের অংশ নাকি অংশ নয়?


সুরা ফাতেহা কুরআনের অংশ/অংশ নয়।
আল্লাহ বলেছেন : ওয়া লাক্বাদ আতাইনাকা
সাব’আম মিনাল মাছানী ওয়াল কুরআনাল
আযীম। (সুরা হিজর:৮৭) (অর্থ : আমি তোমাকে
দিয়েছি বার বার পঠিত সাত আয়াত এবং
মহান গ্রন্থ আল-কুরআন।)
এই আয়াত দ্বারা অনেকে সুরা ফাতেহাকে
কুরআনের অংশ নয় প্রমাণ করতে চান। কিন্তু
তারা যে ধরণের তাফসীর করেন তা সম্পূর্ণ
ভূল তাফসীর। কেননা, তারা ‘ওয়া’ শব্দ দিয়ে
সবসময় কোন বিষয়কে মূল বিষয় থেকে সম্পুর্ণ
আলাদাভাবে ধরে নেন। যা মোটেও উচিত
নয়। কেননা, এই ধরণের বুঝ কুরআনের অন্য কিছু
আয়াতের বিরুদ্ধে যায়। আল্লাহ অত্র আয়াতে
‘ওয়া’ শব্দ দ্বারা সুরা ফাতেহাকে সম্পূর্ণ
কুরআন থেকে আলাদাভাবে উল্লেখ
করেছেন। আর তাই তারা বলেন যে, সুরা
ফাতেহা কুরআনের অংশ নয়।
আল্লাহ বলেছেন : ওয়া লাক্বাদ আতাইনাকা
সাব’আম মিনাল মাছানী ওয়াল কুরআনাল
আযীম। (সুরা হিজর:৮৭) (অর্থ ঃ আমি
তোমাকে দিয়েছি বার বার পঠিত সাত
আয়াত এবং মহান গ্রন্থ আল-কুরআন।)
এই আয়াত দ্বারা কখনো সুরা ফাতেহা
কুরআনের অংশ নয় এটা বলা যায় না। বরং এই
আয়াত দ্বারা এটাই বুঝায় যে, সুরা ফাতেহা
অর্থাৎ বারবার পঠিত সাতটি আয়াত এর গুরুত্ব
অনেক বেশী। যেমননিভাবে রসুল (সাঃ) সুরা
ফাতেহাকে “কুরআনের একটি মহান সুরা”
বলেছেন। (দেখুন সহীহ বুখারী/৪১২২;
ই.ফা.বি)। সুরা ফাতেহাকে রাসুল (সাঃ)
কুরআনের ‘সুরা’ বলেছেন; যেমনভাবে অন্য
সুরাগুলোও এক একটি ‘সুরা’। তবে সুরা
হিজর:৮৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলা সুরা
ফাতেহার অধিক গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন।
‘ওয়া’ দ্বারা সব সময় কোন বিষয়কে মূল বিষয়
থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বুঝানো হয় না। বরং
কখনো কখনো গুরুত্বের কারণে ঐ বিষয়কে মূল
বিষয় থেকে আলাদাভাবে বলা হয়। যেমন
আল্লাহ তা’আলা বলেছেন : তা’রুজুল
মালাইকাতু ওয়ার রূহু ইলাইহি (সুরা
মা’আরিজ:৪) (অর্থ : মালাইকাহ
(ফেরেশতাগণ) ও রূহ (জিবরীল) তাঁর
(আল্লাহর) দিকে উর্ধ্বগামী হয়) এই আয়াতে
আল্লাহ মালাইকাহ এবং জিবরীল (আঃ) কে
আলাদাভাবে উল্লেখ করেছেন যে, তারা
আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয়। এখন ‘ওয়া’
শব্দ দ্বারা যদি সব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আলাদা
বিষয় ধরে নেই, তাহলে কি বলব যে, “জিবরীল
(আঃ) মালাইকাহ নন; বরং তিনি মালাইকাহ
থেকে আলাদা কোন কিছু”????!!!! আশা করি
এমন তাফসীর করা মোটেও সঠিক নয়। বরং
এখানে এক্ষেত্রে এর তাফসীর হবে এটা,
জিবরীল (আঃ) ও একজন মালাইকাহ, কিন্তু
সকল মালাইকাহর চেয়ে তিনি উচ্চ মর্যাদা
সম্পন্ন। আর তাই আল্লাহ তা’আলা অত্র
আয়াতে জিবরীল (আঃ) কে মালাইকাহ
থেকে আলাদাভাবে উল্লেখ করেছেন। তাই
এটা বলা যাবে না যে, জিবরীল (আঃ)
মালাইকাহ নন।
আরোও একটি উদাহরণ দেওয়া যায়। আল্লাহ
বলেছেন : ফিহিমা ফাকিহাতুও ওয়া নাখলুও
ওয়া রুম্মানুন। (সুরা আর রহমান:৬৮) (অর্থ :
সেখানে রয়েছে ফলমুল এবং খেজুর ও
ডালিম।)
এই আয়াতে আল্লাহ ফলমুল এবং খেজুর ও
ডালিমকে আলাদাভাবে উল্লেখ করেছেন।
এখন ‘ওয়া’ শব্দ দ্বারা যদি সব ক্ষেত্রে
সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় ধরে নিই, তাহলে কি
বলব যে, “খেজুর ও ডালিম ‘ফলমূল’ নয়; বরং
খেজুর ও ডামিল ফলমূল থেকে আলাদা কোন
কিছু”????!!!! আশা করি এমন তাফসীর মোটেও
সঠিক নয়। বরং এখানে এক্ষেত্রে এর
তাফসীর হবে এটা, খেজুর ও ডামিল এর গুরুত্ব
অন্যান্য ফলমূল থেকে আলাদা। আর তাই
আল্লাহ তা’আলা অত্র আয়াতে খেজুর ও
ডালিমকে ‘ফলমুল’ থেকে আলাদাভাবে
উল্লেখ করেছেন। তাই এটা বলা যাবে না যে,
খেজুর ও ডালিম ‘ফলমুল’ নয়।
অনুরূপ সুরা হিজর :৮৭ নং আয়াতে সুরা
ফাতেহার অধিক গুরুত্বের কারণে তাকে
সম্পূর্ণ কুরআন থেকে আলাদাভাবে উল্লেখ
করেছেন। তাই এটা বলা যাবে না যে, সুরা
ফাতেহা কুরআনের অংশ নয়।
আল্লাহ সবচেয়ে ভাল জানেন।